কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি, বোরকা ও সাতটি মুঠোফোন নিজ জিম্মায় রাখার অভিযোগে দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আসাদুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন, গোলাম মহিউদ্দীন, ইমরান হোসেন, গাজী আসিফ বিন লতিফ, মো. আল আমীন ও দিদারুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার নির্দেশক্রমে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
জানতে চাইলে আসাদুর রহমান বলেন, ‘মাজহারুলের বিরুদ্ধে তিতাসে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র জিম্মা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। এই কারণে আমরা তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।’
জামাল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র কুমিল্লার চান্দিনা থেকে উদ্ধার করি। জামালকে হত্যা করার পর ৩০ এপ্রিল রাত নয়টায় আসামিরা নোয়াখালী যাওয়ার পথে বুড়িচংয়ের নিমসার এলপিজি পাম্পে তাঁদের পূর্বপরিচিত দেবীদ্বারের নবীয়াদ গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্পাদক মাজহারুলের কাছে অস্ত্র, গুলিভর্তি স্কুলব্যাগ ও শপিংব্যাগ, মুঠোফোন দেন। পরে আসামিদের সঙ্গে মাজহারুল মাইক্রোবাসে ওঠেন। এরপর চান্দিনা উপজেলা পরিষদে যাওয়ার সড়ক থেকে ২০০ গজ পূর্বে ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে ঝোপের মধ্যে রেখে দেন। ৯ মে রাত সাড়ে ১২টায় আমরা মাজহারুলকে গ্রেপ্তার করি। একই সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধার করি।’
এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে চান্দিনা থানায় মাজহারুল, তিতাসের জিয়ারকান্দি গ্রামের মো. সুজন, আরিফ, কালা মনির, শাহ আলী ও দাউদকান্দি উপজেলা চরচারুয়া গ্রামের দেলোয়ারসহ অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে ৪ জনের নামে মামলা করি। পরে বুধবার বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান তাঁর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি অস্ত্র উদ্ধারের বর্ণনা ও মাজহারুলের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কথা বলেন।
পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেলে মাজহারুলকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল রাত আটটার পর দাউদকান্দির গৌরিপুর পশ্চিম বাজার বাইতুন নূর জামে মসজিদ এলাকার সুমাইয়া কনফেকশনারির সামনে বোরকা পরা তিন দুর্বৃত্ত গুলি করে জামালকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় নিহত জামাল হোসেনের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page